ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

রবিবার, ২১ জুন, ২০১৫

অনুগত থাকার প্রতিযোগিতা নেতৃত্ব নয়: মইনুল হোসেন


ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকালে তার সাথে সাক্ষাৎ করার ব্যাপারে বিএনপির মাত্রাতিরিক্ত উৎসাহ এটাই প্রমাণ করতে চাইলো যে, ভারতের প্রতি আনুগত্যের ব্যাপারে তারও কমতি নেই, ব্যাপারটি যেমন ছিল বিব্রতকর তেমনি ছিল দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ। ক্ষমতার প্রভাব-প্রতিপত্তি যাদের কাছে সব কিছু, তারা মান-মর্যাদার কথা ভাবেন না। ভাবেন না যে অন্য দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে আনুগত্য প্রমাণের প্রতিযোগিতা স্বাধীন দেশের নেতৃত্ব হতে পারে না। নিজের জনগণের ওপর নির্ভরশীল নেতৃত্ব অন্যদের কাছেও শ্রদ্ধা পায়। নিশ্চয়ই নরেন্দ্র মোদি একজন বড় মাপের নেতা হিসেবে, আমাদের মেহমান হিসেবে তাকে আমরা যথোপযুক্ত সম্মান দেখিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী মোদির সাথে নিজ প্রচেষ্টায় সাক্ষাতের ব্যাপারে বিএনপি নেতাদের এতটা আগ্রহ দেখানোর কোনো প্রয়োজন ছিল না। বাংলাদেশে কী ধরনের রাজনীতি চলছে, সেটা তাকে অবহিত করারও কোনো দরকার ছিল না। গণতন্ত্রের নামে এখানে কী চলছে, সেটা তার অবশ্যই কিছুটা বেশি জানা আছে। অবশ্য বিএনপি বলতে চাইবে, দেশের সঙ্কট অবসানের প্রয়োজনে সরকারি নেতারা যার কথা শুনবেন, তার কাছে যাওয়া তারা সঠিক মনে করেছেন।

অপর দিকে সরকার সব ধরনের চেষ্টাই করেছে, যাতে মি. মোদি বেগম খালেদা জিয়ার সাথে দেখা না করেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তো প্রশ্নই করেছেন, বেগম খালেদা জিয়া কে? ক্ষমতার রাজনীতি করতে গিয়ে সমগ্র রাজনীতিই এক হাস্যকর পর্যায়ে পৌঁছেছে। রাজনীতিতে আত্মমর্যাদা বলতে কিছু আছে বলে মনে হয় না। সরকারের প্রচেষ্টাকে অগ্রাহ্য করে মি. মোদি বেগম খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করে কূটনৈতিক বিজ্ঞতারই পরিচয় দিয়েছেন।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সঙ্কটের স্বরূপ উপলব্ধির জন্য একজন বন্ধু ও গণতান্ত্রিক নেতা হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রীরই আগ্রহ দেখানোর কথা ছিল দ্বিতীয় বৃহত্তম দল বিএনপির নেতাদের সাথে সাক্ষাৎ করে দেশের গণতান্ত্রিক সঙ্কট সম্পর্কে জানার। আমাদের বর্তমান সঙ্কট এত উৎকট ও বিপজ্জনক যে, আমাদের বন্ধুরা তা উপেক্ষা করতে পারেন না।
মি. মোদি এটা জোর দিয়ে বলেছেন, শেখ হাসিনা এবং তিনি ঠিক একইভাবে চিন্তা করেন। এ কথা বলায় মহলবিশেষের ভুল ব্যাখ্যা দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, তিনি এর দ্বারা প্রকৃতপক্ষে কী বোঝাতে চেয়েছেন, সেটা আমাদের পক্ষে ধারণা করা কঠিন। কারণ, দু’জন প্রধানমন্ত্রী কোন কোন বিষয় নিয়ে একান্তে আলাপ করেছেন তা আমাদের জানা নেই। তবে সন্ত্রাসবাদবিরোধী সংগ্রামে তার সমর্থনের কথা যদি ধরি, তাহলে বলতে হয় মি. মোদি ভালো করেই জানেন, স্বৈরাচার সন্ত্রাসের জন্ম দিয়ে থাকে এবং সন্ত্রাসের ভয় কাজে লাগিয়ে জনগণকে গণতন্ত্র থেকে বঞ্চিত রাখা হয়। মি. মোদি যখন বাংলাদেশ সফর করছিলেন তখন গণমাধ্যমে এ খবরটি প্রচারিত হয়েছিল যে, ফেনীর একজন সরকারি দলের সংসদ সদস্যের গাড়িবহর থেকে ৩৬টি আগ্নেয়াস্ত্র পুলিশ উদ্ধার করে এবং তার ২৬ জন অনুসারীকে গ্রেফতার করে। এ ব্যাপারে আমরা কোনো মন্তব্য প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকি। তবে কারা কী ধরনের সন্ত্রাসী কাজে ব্যস্ত, তার কিছুটা চিত্র এ ঘটনায় ফুটে উঠেছে। সর্বত্র অস্ত্রধারীদের অপরাধ যেভাবে বেড়ে চলেছে, তাতে দেশ যে নৈরাজ্যের দিকে যাচ্ছে, তাতে কারো মনে সন্দেহ থাকার কথা নয়। মি. মোদি অবশ্য চাইবেন, ভারতের সন্ত্রাসীরা যাতে বাংলাদেশে আশ্রয় না পায়। তার জন্য এ দেশের জনগণের সহযোগিতাই বেশি প্রয়োজন হবে।
বিএনপির সমস্যা হচ্ছে, দলটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিকল্প শক্তি হিসেবে দায়িত্ব পালন করার উপযোগী দল হিসেবে গড়ে ওঠেনি। সুতরাং দলটির নেতৃবৃন্দ যখন গণতন্ত্রের সমর্থনে কথা বলেন বা আওয়ামী লীগের অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন, তখন তা জনমনে আস্থার কোনো বোধ সঞ্চার করে না। গণতান্ত্রিক পার্টির অবর্তমানে আমরা গণতন্ত্রের প্রত্যাশা করে আসছি এবং এই স্ববিরোধিতার মধ্যে দীর্ঘকাল বসবাস করে চলেছি। এখন ভোটের গণতন্ত্রকেও বিদায় দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে ক্ষমতায় থাকার জন্য নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা বাতিল হয়ে যাওয়ার পর ভারতের অনুগ্রহ পাওয়ার ব্যাপারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে অঘোষিত একটা প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। ভাবটা এমন যে, সরকারে থাকতে হলে ভারতের সমর্থন অপরিহার্য। জনগণের সমর্থন না থাকলেও চলবে। ভারতের বন্ধুত্ব চাওয়া আর ভারত সরকারের কাছে অনুগত থাকার চিন্তা-ভাবনা এক হতে পারে না।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বিএনপির ভারতপন্থী অবস্থান সম্পর্কে বোঝাতে পারলে দলটির ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা আছে, এমনটি প্রত্যাশা করাও সত্যিই বিব্রতকর। বিএনপি কেন, যেকোনো সুস্থ চিন্তার দলও চাইবে না ভারতবিরোধী হতে। ভারতের সাথে বন্ধুত্বসুলভ সম্পর্ক উভয় দেশের পারস্পরিক স্বার্থেই রক্ষা করতে হবে।
গণতন্ত্রের স্বার্থে বিএনপির জন্য উত্তম কাজ হবে দলটিকে নতুন আঙ্গিকে সংগঠিত করা, যাতে এটি বিকল্প গণতান্ত্রিক দল হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে। রাজনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসার কারণে বিএনপিকেও বড় ধরনের পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে যেতে হবে। জরুরিভাবে প্রয়োজন হবে দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্র চালু করা। এটা স্বীকার করে নিতে হবে যে, নির্বাচনের রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ আর অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ক্ষমতা ত্যাগ করবে না। এখন রাজনীতি হতে হবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এবং দেশের রাজনীতি সেভাবে পুনর্গঠিত করতে হবে। নতুন নেতৃত্বের কথা ভাবতে হবে।
এ কথা সত্য যে, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিএনপির নেতিবাচক জনপ্রিয়তা রয়েছে। সে কারণে পালাক্রমে ক্ষমতায় আসাও সম্ভব হয়েছে। দুই দলের মধ্যকার সে ধরনের নির্বাচনী খেলাও শেষ হয়েছে। বিএনপিকে ক্ষমতায় বসাতে আওয়ামী লীগ নিশ্চয়ই নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে যাবে না।
কিন্তু বিএনপির গণতান্ত্রিক ভাবমূর্তির জন্য জনসাধারণের মধ্যে কোনো ইতিবাচক সমর্থন নেই। কারণ, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয়ে যে রাজনীতির চর্চা করছে, তা হলো গণতন্ত্র ধ্বংস করা, ধীরে, পরিকল্পনামাফিক কিন্তু নিশ্চিতভাবে।
বিএনপি যদি ইতিবাচক গণতান্ত্রিক ভাবমূর্তি নিয়ে সুসংগঠিত হতে পারে, তাহলে দলটি গণতন্ত্রের জন্য ইতিবাচক শক্তি হতে পারবে। এ নিয়ে বিএনপি নেতৃবৃন্দকে নিজেদের মধ্যে গুরুত্বসহকারে আলোচনা করতে হবে। দলটির দুর্বলতা কোথায়, সেটা ভালো করে জানতে হবে। যদি দলটি অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক শক্তিরূপে শক্ত অবস্থান নিতে চায়, তাহলে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের শক্তি হিসেবে বিএনপিকে দাঁড়াতে হবে।
অন্য দেশের সাহায্যের ওপর নির্ভর করে কেউ গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা ভোগ করতে পারে না। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে এটা আমাদের অর্জন করতে হবে। ভারত আমাদের স্বাধীনতা অর্জনে সাহায্য করেছে, এরপর আমাদের নেতৃবৃন্দের ওপর দায়িত্ব বর্তেছে জনগণের স্বাধীনতা রক্ষা করার এবং দেশের স্বাধীনতাকে অর্থবহ করে তোলার। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ অর্থাৎ স্বাধীনতা অর্জনের পর এখন জনগণের মুক্তির সংগ্রামের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী একটি বিষয় খুব পরিষ্কার করে বলেছেন এবং একাধিকবার বলেছেন, ভারত ও বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে একযোগে হাঁটবে। আর সেটা তখনই সম্ভব হবে যখন ভারত ও বাংলাদেশের জনগণ সার্বভৌম সমতার ভিত্তিতে একটা শক্তিশালী সম্পর্কের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আস্থার সাথে পথ চলবে। দু’টি দেশ তখনই একসাথে হাঁটতে পারবে, যখন দুই দেশের জনগণ একসাথে হাঁটতে আগ্রহী হবে।
উভয় দেশের স্বার্থ বড় করে দেখলেই আমরা একসাথে হাঁটতে পারব। আমাদের বিশ্বাস, প্রধানমন্ত্রী মোদির সদিচ্ছা আছে, আন্তরিকতাও আছে। কিন্তু এটা তো অস্বীকার করার উপায় নেই যে, ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে তার দেশের স্বার্থকেই বড় করে দেখতে হবে। আমাদের স্বার্থ ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর একার সদিচ্ছায় রক্ষা পাবে, এ রকম আশা যুক্তিসঙ্গত নয়। নেতৃত্বের বলিষ্ঠতা আমাদেরও দেখাতে হবে। সে নেতৃত্বের শক্তি ও সাহস আসতে হবে জনগণের মধ্য থেকে।
বাংলাদেশের উন্নয়নকাজে ভারতের সাহায্য-সহযোগিতা আর ভারতের কাছ থেকে আন্তর্জাতিক নদীগুলোর পানিপ্রবাহের ন্যায়ভিত্তিক অংশ পাওয়া একেবারে ভিন্ন ব্যাপার। অর্থনৈতিক উন্নয়নে সাহায্য অনেক দেশ থেকেই পাওয়া যাবে। উন্নত দেশগুলো অনেক বেশি দিতে পারে। প্রধানমন্ত্রী মোদি নিজেই ভারতকে একটি দরিদ্র দেশ মনে করেন। তাই ভারতের সাথে বন্ধুত্বের প্রধান ভিত্তি হতে হবে দুই দেশের মধ্যকার দেনা-পাওনার বিষয়ে সুবিচার নিশ্চিত করা। আন্তর্জাতিক নদীগুলোকে আন্তর্জাতিকভাবে ব্যবহার করার সম্মিলিত ব্যবস্থা থাকতে হবে। যৌথ নদী কমিশনের অস্তিত্ব নথিপত্রে থাকলেও কার্যত নেই।
মুক্তিযুদ্ধকালে ভারতের সার্বিক সহযোগিতা অর্থবহ করতে মুক্তিযুদ্ধের গণতান্ত্রিক অঙ্গীকার বাস্তবায়নে প্রয়োজন ভারতের আন্তরিকতা।
তিস্তার পানিচুক্তির বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি প্রমাণ করেছেন, দাবি আদায়ের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের কাকুতি-মিনতি যথেষ্ট হতে পারে না। মি. মোদির সদিচ্ছার সুফল পেতে হলে আমাদের মধ্য থেকেও নেতৃত্বের চাপ থাকতে হবে। খবর৫২ ডট কম এর সৌজন্যে

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন